রবিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১৯

ইংরাজি সাহিত্যের ইতিহাস

 ইংরাজি সাহিত্যের ইতিহাস

সাহিত্য কি ও পড়বো কেন?

  সাহিত্য পৃথিবীর একমাত্র বস্তু যা কোনো সীমারেখার মধ্যে আবদ্ধ থাকেনা। একটি সাহিত্য সৃষ্ট হয় এই পৃথিবীর প্রত্যেক জীবের জন্য। 

  সাহিত্যের কথা শুরু করলে প্রথমেই চলে আসে মানবজাতির অগ্রগতির ইতিহাসের কথা। এই আধুনিক পৃথিবীর অধিবাসীরা মনুষ‍্যেতর প্রাণী থেকে মানুষ হয়ে ওঠার সফরের মাধ্যমেই অর্জন করেছে জ্ঞান, বুদ্ধি, অভিজ্ঞতা, অনুভব ক্ষমতা, সংবেদনশীলতা, সহমর্মিতা। এই ক্ষমতা গুলিই ক্রমে ব্যক্ত হয়েছে সাহিত্য হিসেবে।

  মানুষ গুহা জীবন থেকে বেরিয়ে জোটবদ্ধ হয়ে বসবাস শুরু করার মাধ্যমে পার করেছে সমাজ গঠনের প্রথম ধাপ। বিভিন্ন ঐতিহাসিকদের দ্বারা আবিষ্কৃত গুহাচিত্র তৎকালীন জীবনযাত্রার ছবি তুলে ধরে। আসলে সাহিত্য হলো সমাজের আয়না। আমরা যে যুগে বাস করছি তার লিখিত পটচিত্র বা যে যুগ অতিবাহিত হয়ে গেছে তার সামাজিক প্রেক্ষাপট অনুধাবন করতে পারি একমাত্র সমকালীন সাহিত্যের সাহায্যে।

  তাই সাহিত্য বুঝতে গেলে অবশ্যই বুঝতে হবে ইতিহাস। মানুষের স্বপ্ন, আশা, আশাভঙ্গ, সামাজিক আচরণ, খাদ্যাভ্যাস, রীতি-নীতি ইত্যাদি বোঝার জন্য যেমন সাহিত্য এক মাধ্যম তেমনই ইতিহাসও আরেকটি মূল মাধ্যম। এরিস্টটল বলেছেন, “Poetry is more serious and philosophical than history.” আবার গোথ সাহিত্যকে বলেছেন, “the humanization of the whole world.”

  একটি সাহিত্য তখনই অমরত্ব লাভ করে যখন তার বক্তব্য স্থান, কাল, পাত্রের গন্ডি ছাড়িয়ে সর্বজনীন ও সর্বকালীন হয়ে ওঠে। যেভাবে বর্ষায় ঠোঁটে গুনগুনিয়ে ওঠেন রবীন্দ্রনাথ, সেভাবেই পাখির ডাকে মনে পড়ে যান কবি কিটস, আবার বেকারত্বের জ্বালায় জ্বলতে থাকা তারুণ্য অনুধাবন করতে পারেন John Osborne এর নাটক “Look Back in Anger” এর মর্মার্থ। বিশ্বাস ঘাতকতার কথা উঠলে যেমন আসে মীরজাফরের উদাহরণ তেমনই আসে Mackbeth এর প্রসঙ্গ।

 আরেকটি বিশেষ আঙ্গিক যেকোনো সাহিত্যকে প্রাচুর্য প্রদান করে তা হলো লেখকের নিজস্ব ও অভিনব স্টাইল। যখন একজন লেখক তাঁর কলমের মাধ্যমে পাঠককূলের সামনে সমাজের চিত্র তুলে ধরেন তখন সেই চিত্রে মিশে থাকে সেই লেখকের নিজস্ব চিন্তাধারা এবং দৃষ্টিভঙ্গী। কারুর দৃষ্টিভঙ্গী হতে পারে সদর্থক কারুর বা নঞ‌র্থক। এই দুই ধারার চিন্তাভাবনাকে পাশাপাশি রেখে বিচার করাকেই বলা হয় “food for thought”।

 শুধুমাত্র ইতিহাস বা সমাজ নয়, সাহিত্য কর্মের আরেকটি বিশেষ কাজ হলো মানুষকে চেনা বা চেনানো। রবিঠাকুর তাঁর “ঘরে বাইরে” উপন্যাসের শুরুতেই বলেছিলেন মানব চরিত্র বহুমুখী। একজন মানুষকে আমরা যেভাবে দেখি সেই মানুষ স্থান, কাল, পাত্র নির্বিশেষে ভিন্ন ভিন্ন আচরণ করতে পারেন। মানব চরিত্র বিশ্লেষণ সবথেকে কঠিন ও দুরূহ কাজ যে কর্মযজ্ঞে ব্রতী হয়েছে শত শত কলম। 

 সাহিত্য আসলে শব্দ দ্বারা রচিত জীবনের এক সুন্দর ছবি। এটি মানুষের চিন্তা-ভাবনা, অনুভূতি ও অনুধাবন ক্ষমতার এক ও একমাত্র লিখিত নথি। মানব জীবনের উত্থান পতনের ইতিহাস থেকে আধুনিক সমাজ গঠন ও সেই সমাজের জীবনযাত্রা, মানসিক ও তাত্ত্বিক গতিবিধির বর্ণনায় মুখরিত হয় আধুনিক সাহিত্যের বক্তব্য। সাহিত্য এমন এক বহতা নদী যার জোয়ার আছে কিন্তু ভাঁটা নেই।

[ পরবর্তী পর্ব: Old English/ Anglo-Saxon Period]





৩টি মন্তব্য:

  1. Article টি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। যদি কোনো suggestion থাকে তবে এখানে লিখে জানাতে পারেন।

    উত্তরমুছুন
  2. ১। প্রথমেই অভিনন্দন এমন একটি প্রয়াসের জন্য।

    ২। সাহিত্যের ভূমিকাই যখন, তখন একটি প্রাসঙ্গিক কথা বলি- সাহিত্য শব্দের উৎপত্তি। আমি নিজে সংষ্কৃতজ্ঞ নই, তবে এর দুটি ব্যুৎপত্তি শুনেছি।

    (ক) স হিত অর্থে সাহিত্য। অর্থাৎ যা সমাজের হিত সাধন করে তা-ই সাহিত্য।

    (খ) সহিত শব্দ থেকে সাহিত্য। অর্থাৎ যা মানুষের সঙ্গে সঙ্গে চলে তা-ই সাহিত্য।

    ৩। একটি তর্ক: মানুষের চরিত্র বহুমুখী বোঝাতে গিয়ে যেখানে "নির্বিশেষে" বলেছেন, সেটা মনে হয় 'বিশেষে' হবে, কারণ মানুষের তাৎক্ষণিক চরিত্র বা আচরণ ওই গুলির (স্থান, কাল, পাত্র) ওপর নির্ভরশীল।

    উত্তরমুছুন

Thank you for your valueable comment.

ল্যুভ মিউজিয়াম

 #ঘরকুণোর_বিদেশ_যাত্রা #কেয়া_চ্যাটার্জি প্যারিস পর্ব • #ল্যুভর মিউজিয়াম ও প্যারিসের একটি সন্ধ্যে ১১৯০ খ্রিস্টাব্দ যখন প্যারিস শহরটি এতটা বিস...